নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পৌষের শুরুতেই উত্তরের ঈশ্বরদীতে তীব্র শীতের দাপট বিরাজ করছে। শীতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, বিশেষ করে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের কর্মজীবনে পড়েছে বড় ধরনের ভাটা। গত চার দিন ধরে অব্যাহত শীতের সঙ্গে যোগ হয়েছে ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাস। দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিলছে না, ফলে হাট-বাজার ও রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ঈশ্বরদীতে চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
বুধবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলার রেলগেট, আলহাজ্ব মোড়, বাজার ও স্টেশন এলাকা ঘুরে দেখা যায়—ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে শ্রমজীবী মানুষগুলো কাজের অভাবে অলস সময় কাটাচ্ছেন। অনেক জায়গায় শীত নিবারণের জন্য খড়কুটো জোগাড় করে আগুন জ্বালাতে দেখা গেছে। কুয়াশার ঘনত্ব কিছুটা কমলেও শীতের তীব্রতা কমেনি।
আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, বুধবার দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন। এর আগে সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.৮ ডিগ্রি এবং মঙ্গলবার ১২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রেলগেট এলাকায় প্রতিদিন শ্রমিক হাটে কাজের অপেক্ষায় বসে থাকা লালপুর উপজেলার বিলমারি গ্রামের রিয়াজুল জানান, ভোর থেকেই কাজের আশায় এখানে বসতে হয়। কিন্তু এত কুয়াশা আর শীতের কারণে কেউ কাজ নিতে আসছে না। টানা দুই দিন ধরে বসে আছি, কোনো কাজ নেই।
শহরের আমবাগানে পাইকারি সবজি বাজারে ঢাকি ভরে লালশাক বিক্রি করতে আসা জয়নগর গ্রামের আলিফ হোসেন বলেন, তীব্র শীত ও কুয়াশার কারণে বেচাকেনা অনেক কমে গেছে। বাইরে মানুষের সমাগমও খুবই কম।
পৌর শহরের রহিমপুর এলাকার রিকশাচালক সেকেন্দার আলী বলেন, প্রতিদিন সকাল ৭–৮টার মধ্যে বের হই। কিন্তু আজ সকালে কুয়াশায় কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা দেখে ৯টার পর বের হয়েছি। তবু রাস্তায় যাত্রী নেই। আয় করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্টেশন ও মালগুদাম এলাকায় শীতের তীব্রতায় ছিন্নমূল মানুষগুলোকে চরম কষ্টে দিন কাটাতে দেখা গেছে। খড়কুটো জোগাড় করে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা। গরম কাপড়ের অভাবে তাদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে।
শুষ্ক আবহাওয়া ও ঠান্ডা বাতাসের কারণে বায়ুদূষণ বেড়েছে। এর ফলে শিশু ও বৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর চাপও বৃদ্ধি পেয়েছে।